এন্ডোসিমবায়োসিসঃ A2Z

এন্ডোসিমবায়োসিসঃ A2Z

লেখাঃ ডা. রাজীব হোসাইন সরকার

 

উদ্ভিদের ইউক্যারিওটিক (সুকেন্দ্রিক) কোষের সবচেয়ে ইন্ট্রেস্টিং হাইপোথিসিস হলো- এন্ডোসিমবায়োসিস

পুরো ব্যাপারটা খুব সহজ করে বলা যাক।

একটি আদিকোষ (প্রাককেন্দ্রিক কোষ) চুপচাপ বসে আছে। এর ভেতরে দুটি ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করলো। এখন, একটি কোষের ভেতরে (Endo: Within) দুইটি ভিন্ন কোষ জীবনধারণ (Bio: Life, Osisis: Process) করছে।

দুটো কোষ একত্রে (Syn: Together) থাকছে। পরস্পরের উপর কিছুটা নির্ভরশীল (Symbiosis)। যেমনঃ একটি ব্যাকটেরিয়াম খাদ্যপ্রস্তুত করছে, আরেকটি ব্যাকটেরিয়াম সেই খাদ্য থেকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় শক্তি উৎপাদন করছে।

নোটঃ ব্যাপারটা সবসময় মিথোজীবি বা Symbiosis হবে এমন নয়। নির্ভরশীলতা নাও থাকতে পারে।

শব্দভাঙ্গনঃ

এন্ডো (Endo) অর্থ ভেতরে (within)।

সিন (Syn) অর্থ একইসাথে (Together)।

বায়ো (Bio) অর্থ জীবন (Life)।

অসিস (-osis) অর্থ প্রক্রিয়া (Process)।

ব্যাখ্যাঃ একটি আদিকেন্দ্রিক কোষের ভেতরে দুইটি ব্যাকটেরিয়া কোষ (Bio), একসাথে (Syn) বসবাস করছে। এই বসবাসের সময় পারস্পারিক নির্ভরশীলতা প্রক্রিয়া (-osis) কে বলা হয়- এন্ডোসিমবায়োসিস।

ডিপ বেসিকঃ কোষের ভেতরে প্রবেশ করা দুটো ব্যাকটেরিয়াম দুই ধরণের।

একটি ফটোসিনথেটিক (ফটো বা আলোকে ব্যবহার করে খাদ্য সিনথেসিস বা উৎপন্ন করে)। তাই বলা যায়, এই ব্যাকটেরিয়াম কোষটি বর্তমানে ক্লোরোপ্লাস্ট নামে পরিচিত।

কোন ধরণের ব্যাকটেরিয়া ক্লোরোপ্লাস্ট হিসেবে কাজ করছে?

-সায়ানোব্যাকটেরিয়া। তোমরা জানোই, সায়ানোব্যাকটেরিয়া বা নীলাভ সবুজ শৈবাল (শৈবাল নয়, ব্যাকটেরিয়া) সূর্যের আলোকে ব্যবহার করে সালোকসংশ্লেষণ ঘটাতে পারে।

অন্য ব্যাকটেরিয়ামটি হলো- অ্যারোবিক ব্যাকটেরিয়া। এরা আসলে- আলফা প্রোটিওব্যাকটেরিয়া (Alphaproteobacteria)।

এরা মাইটোকন্ড্রিয়ার মতো কাজ করতে পারে।

আলফাপ্রোটিওব্যাকটেরিয়া কীভাবে মাইটোকন্ড্রিয়া হিসেবে কাজ করতে পারে?

-আলফাপ্রোটিওব্যাকটেরিয়া বেঁচে থাকার জন্য অক্সিজেন গ্রহণ করে। এজন্যই এদের বায়বীয় (Aerobic: Air needed/Oxygen Needed) ব্যাকটেরিয়া বলে।

এই ব্যাকটেরিয়ার দেহে সুকেন্দ্রিক কোষের সাইট্রিক অ্যাসিড চক্র (ক্রেবস চক্র/TCA Cycle) ঘটে। এই চক্রের মাধ্যমেই উদ্ভিদ কিংবা প্রাণি শক্তি উৎপন্ন করে। এই চক্রের কারণেই মাইটোকন্ড্রিয়াকে বলা হয়- শক্তিঘর বা পাওয়ার হাউস।

মাইটোকন্ড্রিয়া ও ক্লোরোপ্লাস্ট যে ব্যাকটেরিয়াম বা আদিকোষী কোষ, এর স্বপক্ষে প্রমাণ কী?

  • আদিকোষী জীবদের মতোই এদের দেহে নিজস্ব DNA আছে।

  • নিজস্ব DNA থাকায় এদের এরা নিজেরা নিজেরা বিভাজিত হতে পারে।

  • আদিকোষীদের মতোই এদেরও নিজস্ব 70S রাইবোসোম আছে।

নোটঃ ক্লোরোপ্লাস্ট যে ব্যাকটেরিয়া থেকে আসে, তাদের বলা হয়-ফটোসিনথেটিক ব্যাকটেরিয়া (কেন বলে, শুরুতেই বলেছি)।

মাইওটোকন্ড্রিয়া যে ব্যাকটেরিয়াম থেকে আসে, তাদের বলে অ্যারোবিক ব্যাকটেরিয়া। কেন বলে সেটাও উপরে বলেছি।

ইতিহাসঃ ১৯৬৭ সালে (৫৩ বছর আগে) Lynn Margulis সর্বপ্রথম এই হাইপোথিসিস ব্যাখ্যা দেন। কিন্তু ১৯২৪ সালে (৯৬ বছর আগে) রাশিয়ান বিজ্ঞানী বরিস কোজো-পলিয়ান্সকি এই ব্যাপারে প্রথম ধারণা দেন। এটিই সেই বিখ্যাত হাইপোথিসিস, যেখানে আদিকোষ কীভাবে প্রকৃতকোষ হলো, দেখানো হয়েছে।

Razib H Sarkar
02 Sep 2023

কোস্টাল ফ্যাসেট থাকে কোন কশেরুকায়?

প্রশ্নঃ কোস্টাল ফ্যাসেট থাকে কোন কশেরুকায়?

ক) লাম্বার

খ) থোরাসিক

গ) সারভাইকাল

ঘ) কক্কিজিয়াল

উত্তরঃ থোরাসিক কশেরুকা।

 

 

ব্যাখ্যাঃ আমাদের বক্ষ পিঞ্জরে থাকে ১২...

আরও পড়ুন

Published on : 17 Oct 2023

Adenoid কী? কীভাবে ওটাইটিস মিডিয়া (মধ্যকর্ণে সংক্রমণ) ঘটায়?

✒️লেখা: ডা. রাজীব হোসাইন সরকার

 

Adenoid কী? কীভাবে ওটাইটিস মিডিয়া (মধ্যকর্ণে সংক্রমণ) ঘটায়?

উত্তর: Adeno অর্থ গ্রন্থি,...

আরও পড়ুন

Published on : 30 Sep 2023

কোলেসিস্টোকাইনিন: শব্দের রহস্য উন্মোচন

✒️লেখা: ডা. রাজীব হোসাইন সরকার

 

কোলেসিস্টোকাইনিন হরমোনের কাজ

নামের মাঝেই এই হরমোনের ঠিকুজিকোষ্ঠী আছে|

Cole+cysto+kinin

(নামের শেষে -in আছে,...

আরও পড়ুন

Published on : 25 Sep 2023

info@biohaters.com
01713983345
Location